সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

আসমা ওয়াস সিফাত আল্লাহর নাম ও গুণের ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের নীতি

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
690
Comments
1,222
Solutions
17
Reactions
7,086
Credits
5,742
আমরা আল্লাহর ‘আরশের উপর ইস্তেওয়া নিয়ে আলোচনা করব, কিন্তু মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে উত্তম হবে, আল্লাহর নাম ও গুণের ব্যাপারে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের কিছু মূলনীতি উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে মনে করছি:
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আত এ ব্যাপারে একমত যে, আল্লাহর রয়েছে অনেক নাম ও অনেক গুণ। সেগুলো সাব্যস্ত হবে বেশ কিছু নীতির ওপর ভিত্তি করে।

আল্লাহর নামের ব্যাপারে নীতিমালাসমূহ :

• আল্লাহর সকল নামই অতি সুন্দর, চাই সে নামটি এক শব্দে হোক অথবা সংযুক্ত শব্দে হোক অথবা হোক পাশাপাশি কয়েক শব্দের সংমিশ্রণে।
আর আল্লাহ তা'আলার নামসমূহের প্রতি ঈমান স্থাপন করার বিষয়টি তিনটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে: নামের প্রতি ঈমান, নামের নির্দেশিত অর্থের প্রতি ঈমান এবং নামের চাহিদা ও দাবিকৃত প্রভাবের প্রতি ঈমান। যেমন, সে বিশ্বাস করবে যে, তিনি عليم (মহাজ্ঞানী), علم محيط ذو (অসীম জ্ঞানের অধিকারী) এবং أنه يدبر الأمر وفق علمه (তিনি তাঁর জ্ঞান অনুযায়ী সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন)।
• আমাদের রব আল্লাহ তা'আলার নামসমূহ তাওকীফী বা কুরআন-হাদীস নির্ভর, যা পর্যাপ্ত পরিমাণ দলীল-প্রমাণ দ্বারা সাব্যস্ত।
আল্লাহ তা'আলার নামসমূহ দ্বারা নাম ও গুণ সাব্যস্ত করে। তবে যখন নাম বুঝায় তখন তা একই সত্তার নাম হিসেবে সমার্থে, কিন্তু যখন তা দ্বারা গুণ বুঝায় তখন তাঁর নামসমূহে নিহিত গুণসমূহ ভিন্ন ভিন্ন অর্থবোধক।
• আল্লাহ তা'আলার নামসমূহ তাঁর গুণাবলির প্রতিও নির্দেশ করে। কারণ, নামগুলো তাঁর কিছু গুণাবলি থেকে নির্গত।
• আর তাঁর নামের সংখ্যা ৯৯ (নিরানব্বই)-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এবং তা গণনাকারীগণের গণনায় সীমাবদ্ধ করা যাবে না।
• আর আল্লাহ তা'আলার প্রত্যেকটি নামই শ্রেষ্ঠ-মর্যাদাপূর্ণ; কিন্তু সত্যিকার অর্থে সেগুলো শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠতর।
• আর যখন তাঁর কোনো নাম গঠন কাঠামোতে ভিন্ন হয় এবং অর্থের দিক থেকে কাছাকাছি হয়, তখন তা আল্লাহর নামসমূহ থেকে বের হয়ে যায় না। যেমন- গাফূর ও গাফফার।

এ (নামগুলোর) ক্ষেত্রে অবিশ্বাস বা বিকৃতিকরণ বলে গণ্য হবে-
- তা সাব্যস্ত ও প্রমাণিত হওয়ার পর অস্বীকার করা​
- অথবা তা যা নির্দেশ করে, তা অস্বীকার করার দ্বারা।​
- অনুরূপভাবে তা গঠন ও তৈরি করার ক্ষেত্রে নতুন মত প্রবর্তন করা। অথবা সে নামগুলোকে সৃষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর নাম ও গুণাবলির সাথে উপমা দেয়ার দ্বারা ।​
আল্লাহ তা'আলা বলেন,​
وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَلَبِهِ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ [الأعراف: ١٨٠]
“আর যারা তাঁর নাম বিকৃত করে, তাদেরকে বর্জন করুন। তাদের কৃতকর্মের ফল অচিরেই তাদেরকে দেয়া হবে।” [সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ১৮০]

আল্লাহর মহান গুণাবলির প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের মূলনীতি

• আল্লাহ তা'আলার সকল গুণাবলি মহান, প্রশংসনীয়, পরিপূর্ণ এবং তাওকীফী বা কুরআন- হাদীস নির্ভর।

• নামসমূহ থেকে গুণাবলির বিষয়টি অনেক বেশি প্রশস্ত, আর তার চেয়ে আরও বেশি প্রশস্ত ও ব্যাপক হলো আল্লাহ তা'আলার নাম ও গুণাবলির ব্যাপারে কোনো সংবাদ প্রদান ।

• আল্লাহ তা'আলার কর্মসমূহ তাঁর নাম ও গুণ থেকে উত্থিত। প্রতিটি কর্ম কোনো না কোনো নাম বা গুণের প্রভাব।

• আল্লাহ তা'আলার গুণাবলি সম্পর্কে কেউ পুরোপুরিভাবে অবহিত নয় এবং তার ব্যাপারে পরিপূর্ণ কোনো হিসাব বা ধারণাও করে শেষ করা যায় না, আর এগুলো শ্রেষ্ঠ থেকে কানো রকম কম শ্রেষ্ঠতর, যা কোনো রকম কমতি বা ঘাটতি দাবি করে না, এগুলোর অংশবিশেষের ব্যাখ্যা হয় অপর অংশ বিশেষের দ্বারা, যা এক রকম হওয়া দাবি করে না।

• আল্লাহর গুণসমূহ তাঁর জন্য সাব্যস্ত হওয়া বা না হওয়ার দিক থেকে দু' প্রকার: আল্লাহর গুণাবলির মধ্যে কিছু গুণ হ্যাঁ-বাচক বা সাব্যস্তকরণের, আবার কিছু গুণ না-বাচক বা অসাব্যস্তকরণের বা নিষেধসূচক।

• আল্লাহর সাব্যস্তকৃত গুণাবলিসমূহ দু' প্রকার: নিজস্ব সত্তাগত এবং কর্মগত। এগুলো সবই প্রশংসনীয় ও পরিপূর্ণ।

সত্তাগত গুণাবলি: চিরন্তন ও স্থায়ীভাবে তা সাব্যস্ত। আপন সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কল্পনাই করা যায় না এবং তা না থাকাটা এক প্রকার ত্রুটি ও কমতিকে আবশ্যক করে (যা তাঁর জন্য শোভনীয় নয়), আর তা ইচ্ছা অনিচ্ছার সাথেও সম্পর্কিত নয়। কর্মবাচক গুণাবলি এর বিপরীত। সত্তাগত গুণাবলি দুইভাবে সাব্যস্ত হবে:

  • কিছু নীতিগতভাবে সাব্যস্ত (সাধারণভাবে সাব্যস্ত করা যায়, শ্রুত দলীলের প্রয়োজন হয় না। তারপরও তা কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে): যেমন, জীবন, ইচ্ছা, শ্রবণ, দেখা, শক্তি, জ্ঞান, সকল সৃষ্টির উপরে থাকা ইত্যাদি।
  • আর কিছু হলো খবর থেকে প্রাপ্ত বা তথ্যগত: যদি কুরআন ও হাদীসে না আসতো আমরা তা কখনও সাব্যস্ত করতে পারতাম না। যেমন, মুখমণ্ডল বা চেহারা, দু'হাত, পা, দু' চোখ, আঙ্গুল, পিণ্ডলী ইত্যাদি।

কর্মবাচক গুণাবলি: যেমন, হাসা, সন্তুষ্ট হওয়া, হাশরের মাঠে আগমন করা, প্রথম আসমানে নেমে আসা, ‘আরশের উপরে উঠা ইত্যাদি যা আল্লাহর ইচ্ছার সাথে সম্পৃক্ত। যখন ইচ্ছা তখন তিনি তা করেন। আর তা দু'ভাগে বিভক্ত করা যায়:
- লাযেম বা যা একান্তভাবে তাঁর নিজের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন, ‘আরশের উপর উঠা, প্রথম আকাশে নেমে আসা, হাশরের মাঠে আগমন ।​
- মুতা‘আদ্দি বা যা অন্যের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন সৃষ্টি করা, দান করা, নির্দেশ প্রদান ইত্যাদি​
নেতিবাচক বা না-সূচক গুণাবলি: যেমন, মৃত্যু, ঘুম, ভুলে যাওয়া, দুর্বলতা বা অক্ষমতা ইত্যাদি।

• নেতিবাচক গুণাবলির মধ্যে কোনো প্রকার পরিপূর্ণতা ও প্রশংসার বিষয় নেই, তবে এগুলোর বিপরীত গুণাবলি যখন সাব্যস্ত করা হবে তখন তা পরিপূর্ণ ও প্রশংসার বিষয় হবে। যেমন- মৃত্যু নেতিবাচক গুণ যা তার জন্য সাব্যস্ত করা যাবে না। কিন্তু যখন যখন তার বিপরীত ‘হায়াত’ বা চিরঞ্জীব সাব্যস্ত করা হবে তখনই তা হবে প্রশংসামূলক এবং পরিপূর্ণতার ওপর প্ৰমাণবহ।

গুণাবলির ব্যাপারে ওহীর পদ্ধতি হলো: নেতিবাচকের ক্ষেত্রে সংক্ষেপে এবং ইতিবাচকের ক্ষেত্রে বিস্তারিতভাবে।

• গুণাবলির ব্যাপারে কথা বলাটা নামসমূহের ব্যাপারে কথা বলার মতোই, আর গুণাবলির ব্যাপারে কথা বলাটা সত্তার ব্যাপারে কথা বলার মতোই। গুণাবলি সাব্যস্ত করতে কারও সমস্যা হলে বলা হবে, যদি সত্তা সাব্যস্ত করতে সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্যতা না হয় তাহলে গুণ সাব্যস্ত করতেও সাদৃশ্যতা আসবে না।

• কিছুসংখ্যক গুণাবলির ব্যাপারে যে মতামত ব্যক্ত করা যায়, বাকি গুণাবলির ব্যাপারেও একই ধরনের মতামত ব্যক্ত করা যায়। অর্থাৎ কিছু গুণ সাব্যস্ত করতে যদি সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্যতা সৃষ্টি না হয়, তাহলে অপর গুণাবলির ক্ষেত্রেও সাদৃশ্যতা আসবে না।

• আল্লাহর নামসমষ্টি ও গুণাবলির সাথে সৃষ্টির নাম ও গুণাবলি একই রকম শব্দ হলেই তা নামকরণকৃত ও বিশেষিত বিষয়সমূহের এক রকম হওয়াকে জরুরি করে না। যেমন- আল্লাহ তা'আলা নিজেকে সামী' বলেছেন, বাসীর বলেছেন; অন্যদিকে তিনি তার বান্দাকেও সামী' ও বাসীর বলেছেন। কিন্তু উভয় সামী' ও বাসীরের মধ্যে কোনো তুলনা চলে না। সুতরাং শুধু বান্দার নাম বা গুণের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যাওয়ার দোহাই দিয়ে আল্লাহর নাম ও গুণকে অস্বীকার করা যাবে না।

• বিবেকের যুক্তিতে এমন কিছু নেই যা আল্লাহর নাম ও গুণকে প্রমাণ করার বিরোধিতা করে।

• গুণাবলি সংক্রান্ত ভাষ্যগুলোর ব্যাপারে আবশ্যকীয় কাজ হলো, সেগুলোকে তার বাহ্যিক অর্থের ওপর প্রয়োগ করা যা আল্লাহ তা'আলার মহত্ব ও মর্যাদার সাথে মানানসই এবং যা সম্বোধন ও বর্ণনার চাহিদার সাথে সুনির্দিষ্ট, আর যা বুঝা যাবে বর্ণনা প্রসঙ্গ থেকে।

• সুতরাং নাম ও গুণাবলি যখন রবের প্রতি সম্বন্ধযুক্ত করা হবে, তখন তা তাঁর সাথে সুনির্দিষ্ট হয়ে যাবে। যেমনিভাবে তাঁর সত্তা সাব্যস্ত হবে অন্য সত্তার মতো করে নয়, ঠিক তেমনিভাবে তাঁর সকল নাম ও গুণাবলিও সাব্যস্ত করা হবে, যার সাথে সৃষ্টির কোনো নাম অথবা গুণের মিল বা তুলনা করা হবে না।

• যেমনিভাবে আল্লাহ তা'আলার সত্তা ও কার্যাবলি সাব্যস্ত করাটি বাস্তব অর্থেই, ঠিক অনুরূপভাবে তাঁর গুণাবলি সাব্যস্ত করাও বাস্তব অর্থেই নিতে হবে।

• পরবর্তী লোকদের কাছে পরিচিত ‘তাফওয়ীদ্ব’ বা ‘নাম ও গুণের অর্থ না করে যেভাবে তা এসেছে সেভাবে ছেড়ে যাওয়া' নীতি অবলম্বন করা হলে তার দ্বারা প্রকৃত অর্থকে বাদ দেয়া হয়। তাই সেটি নিকৃষ্ট বিদ'আতের অন্তর্ভুক্ত; তবে যদি তাফওয়ীদ্ব (বা যেভাবে এসেছে সেভাবে ছেড়ে দেয়া) দ্বারা প্রকৃত বাহ্যিক অর্থ করার তার ‘ধরণ’ সম্পর্কিত প্রকৃত জ্ঞান উদ্দেশ্য নেয়া হয়, তবে তা সঠিক নীতি।

• কিবলার অনুসারী দল ও গোষ্ঠীগুলোর মাঝে আল্লাহর গুণাবলির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের মতটি মধ্যমপন্থার প্রতিনিধিত্বকারী। তা হলো: তা তুলনাহীনভাবে সাব্যস্তকরণ এবং অর্থশূন্যতাহীন পবিত্রকরণ; কারণ প্রত্যেক (আল্লাহর নাম ও গুণের সাথে) তুলনাকারী ব্যক্তিই অর্থশূন্যকারী এবং সে ঐ ব্যক্তির মতো যে মূর্তিপূজা করে। আর প্রত্যেক (আল্লাহর নাম ও গুণকে) অর্থশূন্যকারী ব্যক্তিই তুলনাকারী এবং সে ঐ ব্যক্তির মতো যে অস্তিত্বহীনের পূজা করে।

• আল্লাহর গুণাবলিকে অস্বীকার করা কুফুরী, সৃষ্টিরাজির সাথে সেগুলোর তুলনা ও উপমা সাব্যস্ত করাটাও কুফুরী।
পরবর্তী লোকদের অপব্যাখ্যা ধ্বংসের আলামত; ব্যাখ্যা তো শুধু তখনই করা যাবে যখন প্রকাশ্য অর্থ করলে তা কুরআন-হাদীসের সকল বর্ণনার পরিপন্থী হয়। তখন সে প্রকাশ্য অর্থের ব্যাখ্যা করা হবে এমন কিছু দিয়ে যা কুরআন-হাদীসের ভাষ্যসমূহের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করবে।

• আল্লাহর গুণাবলির অপব্যাখ্যা করার নীতিই হচ্ছে বিদ'আতী মূলনীতি, আর তার থেকে কোনো কোনোটির ব্যাখ্যা করা জ্ঞানগত ত্রুটি, যা তার প্রবক্তার ওপর নিক্ষিপ্ত হবে ।(১)


১. এ অধ্যায়ে শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীনের আল-কাওয়ায়িদুল মুসলা দেখা যেতে পারে। অনুরূপ আরও দেখা যেতে পারে, ড. মুহাম্মাদ ইউসরী মুহাম্মাদ এর দুররাতুল বায়ান।
 

Attachments

  • আল্লাহর নাম ও গুণের ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের নীতি.webp
    আল্লাহর নাম ও গুণের ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের নীতি.webp
    23.8 KB · Views: 85
COMMENTS ARE BELOW

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Threads
344
Comments
479
Reactions
5,218
Credits
3,527
জাযাকাল্লাহু খাইরান
 
Top