ইমাম বাইহাক্বী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর “আল-আসমা ওয়াস সিফাত” কিতাবে বলেন, “অধ্যায়: দু’হাত সিফাত হিসেবে সাব্যস্ত করা, অঙ্গ হিসেবে নয়।” কারণ,
এক. যেহেতু এ ব্যাপারে সত্যবাদী (আল্লাহ তা‘আলা) স্বয়ং সংবাদ দিয়েছেন। যেমন,
১ আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
২ তিনি অন্যত্র বলেন,
দুই. আর এ প্রসঙ্গে বহু বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন,
৩ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য, যা শাফা‘আত সংক্রান্ত একাধিক হাদীসে এসেছে,
৪ অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, যা বুখারী ও মুসলিমে এসেছে,
অন্য বর্ণনায়: «وكتب لك التوراة بيده» “আপনার জন্য তিনি নিজ হাতে তাওরাত লিখেছেন।” [বুখারী, হাদীস নং ৬৬১৪, ৩৪০৯; মুসলিম, হাদীস নং ২৬৫২]
৫ অনুরূপ যা সহীহ মুসলিমে এসেছে যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা
৬ অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী,
৭ তিনি আরও কিছু হাদীসে উল্লেখ করেন, যেমন: «بيدي الأمر» “আমার হাতে সমস্ত কিছু”। [বুখারী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ৪৮২৬, ৭৪৯১]
৮ এবং «والخير بيديك» “সকল কল্যাণ আপনার দু হাতে” [বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ৩৩৪৫, ৬৫৩০, ৭৫১৮; মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২২১। অনুরূপ মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ৭৭১।]
৯ অনুরূপ «والذي نفس محمد بيده» “এবং যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ।” [বস্তুত তা অনেক হাদীসেই এসেছে, উদাহরণত: ইমাম বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ৬৬৪, ১৯০৪; ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ১১৫১। অনুরূপ বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ২৬১৫; মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৪৬৯।]
১০ তদ্রূপ
১১ তেমনি,
১২ অনুরূপ রাসূলের বাণী,
১৩ আর তাঁর বাণী,
এরপর তিনি [বাইহাক্কী] আরোও উল্লেখ করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী,
তাই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত এ ব্যাপারে একমত যে, আল্লাহ তা‘আলার দু’টি হাত রয়েছে। আর তাঁর এক হাতকে ‘ইয়ামীন’ বা ডান বা বরকতময় বলা হবে। যেমন,
কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আর আসমানসমূহ তার ডান হাতে পেঁছানো থাকবে”। [সূরা আয-যুমার: ৬৭]
অনুরূপ একাধিক হাদীসে ‘ইয়ামীন’ এসেছে। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যা ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ এ ফতোয়ায় বর্ণনা করেছেন।
তাঁর অপর হাতকে কোনো কোনো হাদীসে ‘শামাল’ নামকরণ করা হয়েছে। যেমন মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৭৮৮, ইবন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত।
আবার কোনো কোনো বর্ণনায় ‘ইয়াসার’ এসেছে। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন ইমাম আহমাদ, আস-সুন্নাহ, হাদীস নং ১০৫৯; বাযযার, কাশফুল আসতার ২১৪৪ আবুদ দারদা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীস।
আবার মুসনাদে আহমাদের এর বর্ণনায় এসেছে, ‘কাতিফাহুল ইউসরা’ এসেছে। হাদীস নং ২৭৪৮৮।
হাদীসটিকে শাইখ আল-আলবানী রাহিমাহুল্লাহ সহীহ বলেছেন। আস-সহীহাহ, হাদীস নং ৪৯।
এখানে হাদীসের ভাষ্য, ‘আর তাঁর উভয় হাতই ডান’ এর অর্থ সম্পর্কে দু’টি মত রয়েছে:
এক. অপর হাতটি অবশ্যই বাম হাত বলা হবে, তবে হাদীসে অপর হাদীসে ইয়ামীন বলার অর্থ,
১ বরকতময় বুঝানো। কারণ আল্লাহর প্রতিটি হাতেই কল্যাণ ও বরকত রয়েছে, যাতে করে কেউ ডানের বিপরীতে অন্য হাতে বরকত নেই মনে না করে। দেখুন, ইবন ক্বুতাইবাহ, তা’ওয়ীলু মুখতালাফুল হাদীস পৃ. ১৪২; ইবনুল আসীর, আন-নিহায়াহ ফী গারীবিল হাদীস ২/৩৪৫-৩৪৬; ইবন মানযূর, লিসানুল ‘আরাব ১৩/৪৫৯।
২ কারও কারও মতে, এটি আদব রক্ষার্থে বলা হয়েছে। কারণ আমাদের মাঝে বাম হাত দুর্বল থাকে বা অমর্যাদাপূর্ণ বুঝায়। তাই সেটা থেকে মুক্ত রাখার জন্য বলা হয়েছে, উভয় হাতই ইয়ামীন। এ মতটিই গ্রহণ করেছেন, উসমান ইবন সা‘ঈদ আদ-দারেমী রাহিমাহুল্লাহ। দেখুন, আর-রাদ্দু আলাল বিশর আল-মিররীসী ২/৬৯৮; কাযী আবু্ ইয়‘লা, ইবত্বালুত তা’ওয়ীলাত পৃ. ১৭৬।
দুই. কোনো কোনো আলেম প্রাধান্য দেয়ার নীতি অবলম্বন করে, অপর হাতটিকে শামাল বা ইউসরা বলতে রাযী হননি। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ইমাম আবু বকর ইবন খুযাইমাহ, কিতাবুত তাওহীদ ১/১০২, ১২৭; আবু বকর আল-বাইহাক্বী, আল-আসমা ওয়াস সিফাত ২/১৩৯; কুরতুবী, আল-মুফহিম ৭/৩৯২-৩৯৩।
তবে প্রথম মতটি আমার কাছে বেশি প্রিয়। আমার শাইখ আব্দুল্লাহ গুনাইমান এ মতের পক্ষেই বলতেন।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, আল-গামেদী, আল-বাইহাক্বী ও মাওকিফুহু মিনাল ইলাহিয়াত পৃ. ২৫৬; সুলাইমান আদ-দুবাইখী, আহাদীসুল আকীদাহ আল্লাতী ইউহিমু যাহেরুহাত তা‘আরুদ্ব ফিস সাহীহাইন পৃ. ২৮০।
- প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
(পিএইচডি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা)
সোর্স: শাইখের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
এক. যেহেতু এ ব্যাপারে সত্যবাদী (আল্লাহ তা‘আলা) স্বয়ং সংবাদ দিয়েছেন। যেমন,
১ আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
يَٰٓإِبۡلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَن تَسۡجُدَ لِمَا خَلَقۡتُ بِيَدَيَّۖ
“‘হে ইবলীস! আমি যাকে আমার দু’হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সাজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল?” [সূরা ছোয়াদ, আয়াত: ৭৫] ২ তিনি অন্যত্র বলেন,
بَلۡ يَدَاهُ مَبۡسُوطَتَانِ
“বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৬৪] দুই. আর এ প্রসঙ্গে বহু বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন,
৩ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য, যা শাফা‘আত সংক্রান্ত একাধিক হাদীসে এসেছে,
«يا آدم أنت أبو البشر، خلقك [الله] بيده»
“হে আদম! আপনি মানুষের পিতা, আল্লাহ নিজ হাতে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।” [বুখারী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ৩৩৪০, ৪৭১২; মুসলিম, হাদীস নং ১৯৪।] ৪ অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, যা বুখারী ও মুসলিমে এসেছে,
«أنت موسى اصطفاك الله بكلامه، وخطّ لك الألواح بيده»
“আপনি হচ্ছেন সেই মূসা, যাকে আল্লাহ স্বীয় কথা বলার জন্য মনোনীত করেছেন, আপনার জন্য নিজ হাতে তখতাসমূহ লিখেছেন।”অন্য বর্ণনায়: «وكتب لك التوراة بيده» “আপনার জন্য তিনি নিজ হাতে তাওরাত লিখেছেন।” [বুখারী, হাদীস নং ৬৬১৪, ৩৪০৯; মুসলিম, হাদীস নং ২৬৫২]
৫ অনুরূপ যা সহীহ মুসলিমে এসেছে যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা
«وغرس كرامة أوليائه في جنة عدن بيده»
“স্বীয় হাতে জান্নাতে আদনে তার বন্ধুদের সম্মান গেঁথে দিয়েছেন” [মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ১৮৯।] ৬ অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী,
«تكون الأرض يوم القيامة خُبْزَةً واحدة يتكفاها الجبار بيده، كما يتكفى أحدكم خُبْزَته في السفر، نُزُلًا لأهل الجنة»
“কিয়ামতের দিন সমগ্র যমীন একটি রুটি হবে, মহাশক্তিধর আল্লাহ তাকে ঘুরাবেন, যেমন তোমাদের কেউ স্বীয় দস্তরখানে অথবা সফরে রুটি হাতে ঘুরিয়ে বানিয়ে নেয়, জান্নাতবাসীদের মেহমানদারীর জন্য।” [বুখারী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ৬৫২০; মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৭৯২।] ৭ তিনি আরও কিছু হাদীসে উল্লেখ করেন, যেমন: «بيدي الأمر» “আমার হাতে সমস্ত কিছু”। [বুখারী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ৪৮২৬, ৭৪৯১]
৮ এবং «والخير بيديك» “সকল কল্যাণ আপনার দু হাতে” [বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ৩৩৪৫, ৬৫৩০, ৭৫১৮; মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২২১। অনুরূপ মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ৭৭১।]
৯ অনুরূপ «والذي نفس محمد بيده» “এবং যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ।” [বস্তুত তা অনেক হাদীসেই এসেছে, উদাহরণত: ইমাম বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ৬৬৪, ১৯০৪; ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ১১৫১। অনুরূপ বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ২৬১৫; মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৪৬৯।]
১০ তদ্রূপ
«إن الله يبسط يده بالليل ليتوب مسيء النهار، ويبسط يده بالنهار ليتوب مسيء الليل»
“নিশ্চয় আল্লাহ স্বীয় হাত রাতের বেলায় প্রসারিত করে দেন যাতে দিনের অপরাধীরা তাওবা করতে পারে।” [মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৭৫৯।]১১ তেমনি,
«المقسطون عند الله على منابر من نور عن يمين الرحمن وكلتا يديه يمين»
“ন্যায়-বিচারকারীরা রহমানের ডানপাশে নূরের মিম্বারের উপর থাকবে, আর তার উভয় হাতই ডান [মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ১৮২৭।]।”১২ অনুরূপ রাসূলের বাণী,
«يطوي الله السماوات يوم القيامة ثم يأخذهن بيده اليمنى ثم يقول: أنا الملك، أين الجبارون؟ أين المتكبرون؟ ثم يطوي الأرضين بشماله، ثم يقول: أنا الملك، أين الجبارون؟ أين المتكبرون؟».
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ আসমানসমূহকে ভাঁজ করে ডান হাতে ধরে রাখবেন। অতঃপর বলবেন, আমিই রাজাধিরাজ, কোথাও জবরদস্তিকারীরা? কোথায় অহংকারীরা। তারপর তিনি যমীনগুলোকে ভাঁজ করে বাম হাতে রেখে বলবেন, আমিই রাজাধিরাজ, কোথায় জবরদস্তিকারীরা? কোথায় অহংকারীরা? [মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৭৮৮।] ১৩ আর তাঁর বাণী,
«يمين الله ملأى، لا يَغِيضُها نفقة، سَحَّاء الليل والنهار، أرأيتم ما أنفق منذ خلق السماوات والأرض، فإنه لم يغض ما في يمينه، وعرشه على الماء، وبيده الأخرى القبض يخفض ويرفع»
“আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ণ, খরচের কারণে কমতি হয় না, তোমরা কি দেখ না, রাতদিন অনবরত ঢেলে খরচকারী, তোমরা কি দেখনি আসমান ও যমীন সৃষ্টির পর থেকে তিনি যা খরচ করে আসছেন তা তার ডান হাতে যা আছে তা থেকে একটুও কমায়নি এবং তার ‘আরশ পানির উপরে। আর তার অপর হাতে পাল্লা, যা নিচু করেন এবং উঁচু করেন।” [বুখারী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ৭৪১১, ৭৪১৯; মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ৯৯৩।] এরপর তিনি [বাইহাক্কী] আরোও উল্লেখ করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী,
«إن الله لما خلق آدم، قال له ويداه مقبوضتان: اختر أيهما شئت. قال: اخترت يمين ربي، وكلتا يدي ربي يمين مباركة»
“আল্লাহ তা‘আলা আদমকে সৃষ্টি করে বললেন, যখন আল্লাহর দুহাত মুষ্টিবদ্ধ ছিল, যেটি ইচ্ছে বাছাই কর। আদম বললেন, আমি প্রভুর ডান হাত বাছাই করলাম। আর আমার প্রভুর উভয় হাত ডান, বরকতময়।” [তিরমিযী, আল-জামে‘উস সহীহ, হাদীস নং ৩৩৬৮; ইবন হিব্বান, আস-সহীহ ৬১৬৭; হাকিম, আল-মুস্তাদরাক ১/১৩২; বাইহাক্বী, আল-কুবরা ১০/১৪৭।]তাই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত এ ব্যাপারে একমত যে, আল্লাহ তা‘আলার দু’টি হাত রয়েছে। আর তাঁর এক হাতকে ‘ইয়ামীন’ বা ডান বা বরকতময় বলা হবে। যেমন,
কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আর আসমানসমূহ তার ডান হাতে পেঁছানো থাকবে”। [সূরা আয-যুমার: ৬৭]
অনুরূপ একাধিক হাদীসে ‘ইয়ামীন’ এসেছে। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যা ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ এ ফতোয়ায় বর্ণনা করেছেন।
তাঁর অপর হাতকে কোনো কোনো হাদীসে ‘শামাল’ নামকরণ করা হয়েছে। যেমন মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৭৮৮, ইবন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত।
আবার কোনো কোনো বর্ণনায় ‘ইয়াসার’ এসেছে। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন ইমাম আহমাদ, আস-সুন্নাহ, হাদীস নং ১০৫৯; বাযযার, কাশফুল আসতার ২১৪৪ আবুদ দারদা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীস।
আবার মুসনাদে আহমাদের এর বর্ণনায় এসেছে, ‘কাতিফাহুল ইউসরা’ এসেছে। হাদীস নং ২৭৪৮৮।
হাদীসটিকে শাইখ আল-আলবানী রাহিমাহুল্লাহ সহীহ বলেছেন। আস-সহীহাহ, হাদীস নং ৪৯।
এখানে হাদীসের ভাষ্য, ‘আর তাঁর উভয় হাতই ডান’ এর অর্থ সম্পর্কে দু’টি মত রয়েছে:
এক. অপর হাতটি অবশ্যই বাম হাত বলা হবে, তবে হাদীসে অপর হাদীসে ইয়ামীন বলার অর্থ,
১ বরকতময় বুঝানো। কারণ আল্লাহর প্রতিটি হাতেই কল্যাণ ও বরকত রয়েছে, যাতে করে কেউ ডানের বিপরীতে অন্য হাতে বরকত নেই মনে না করে। দেখুন, ইবন ক্বুতাইবাহ, তা’ওয়ীলু মুখতালাফুল হাদীস পৃ. ১৪২; ইবনুল আসীর, আন-নিহায়াহ ফী গারীবিল হাদীস ২/৩৪৫-৩৪৬; ইবন মানযূর, লিসানুল ‘আরাব ১৩/৪৫৯।
২ কারও কারও মতে, এটি আদব রক্ষার্থে বলা হয়েছে। কারণ আমাদের মাঝে বাম হাত দুর্বল থাকে বা অমর্যাদাপূর্ণ বুঝায়। তাই সেটা থেকে মুক্ত রাখার জন্য বলা হয়েছে, উভয় হাতই ইয়ামীন। এ মতটিই গ্রহণ করেছেন, উসমান ইবন সা‘ঈদ আদ-দারেমী রাহিমাহুল্লাহ। দেখুন, আর-রাদ্দু আলাল বিশর আল-মিররীসী ২/৬৯৮; কাযী আবু্ ইয়‘লা, ইবত্বালুত তা’ওয়ীলাত পৃ. ১৭৬।
দুই. কোনো কোনো আলেম প্রাধান্য দেয়ার নীতি অবলম্বন করে, অপর হাতটিকে শামাল বা ইউসরা বলতে রাযী হননি। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ইমাম আবু বকর ইবন খুযাইমাহ, কিতাবুত তাওহীদ ১/১০২, ১২৭; আবু বকর আল-বাইহাক্বী, আল-আসমা ওয়াস সিফাত ২/১৩৯; কুরতুবী, আল-মুফহিম ৭/৩৯২-৩৯৩।
তবে প্রথম মতটি আমার কাছে বেশি প্রিয়। আমার শাইখ আব্দুল্লাহ গুনাইমান এ মতের পক্ষেই বলতেন।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, আল-গামেদী, আল-বাইহাক্বী ও মাওকিফুহু মিনাল ইলাহিয়াত পৃ. ২৫৬; সুলাইমান আদ-দুবাইখী, আহাদীসুল আকীদাহ আল্লাতী ইউহিমু যাহেরুহাত তা‘আরুদ্ব ফিস সাহীহাইন পৃ. ২৮০।
- প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
(পিএইচডি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা)
সোর্স: শাইখের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
Last edited by a moderator: