মানহাজ আলেমদের প্রশংসাই কি কোনো দাঈ এর গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট?

Joined
Jun 16, 2023
Threads
70
Comments
97
Reactions
1,076
নিজেকে সালাফি বলে পরিচয় দেয়া অমুক মদিনা ভার্সিটির পিএইচডি ধারী আলেম অমুক মুবতাদির প্রশংসা করেছে, তাই অমুক ফুলান ইবন ফুলান বিদআতী থেকে ইলম নেয়া যাবে, তার বই পুস্তক অধ্যয়ন করা যাবে।

কোনো দাঈর ব্যাপারে কোনো আলেমের তাযকিয়াহ/প্রশংসা থাকলেই কি সেটা তার সালাফিয়্যাত এর প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট? এই ভ্রান্ত মূলনীতির ব্যাপারে আল্লামা মুজাহিদ রাবী আল মাদখালি (হাফিযাহুল্লাহ) এর একটি ফতোয়া অনুবাদ করে দিলাম। এটা পড়লে আপনারা স্পষ্ট হয়ে যাবেন।
...

প্রশ্ন: কিছু দাঈ রয়েছেন যাদের সালাফী পরিচয় স্পষ্ট নয় এবং তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে। তবুও কিছু লোক তাদের সাথে এই যুক্তিতে উঠাবসা করছে যে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত সমালোচনা (জারাহ মুফাসসাল) করা হয়নি। আর শাইখ আব্দুল মুহসিন আল আব্বাদ প্রমুখের পক্ষ থেকে তাদের প্রশংসাও রয়েছে। ফলে ভাইয়েরা এই দাঈদের ব্যাপারে "সমালোচক" ও "সমর্থক" এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছেন। তাদের ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?

উত্তর: আমার বক্তব্য হলো: যে ব্যক্তির ব্যাপারে মানুষের মধ্যে মতভেদ রয়েছে এবং যিনি নিজেকে সালাফী মানহাজের মাধ্যমে প্রকাশ না করে শুধুমাত্র অমুক-তমুকের প্রশংসার উপর নির্ভর করছেন, সেক্ষেত্রে যারা তাদের প্রশংসা করেছেন তারা তাদের তাযকিয়াহ প্রদানে নিষ্পাপ নন (অর্থাৎ তাযকিয়াহ প্রদানে তাদের ভুল হতে পারে)।

কারণ, তারা হয়তো ঐ ব্যক্তির বাহ্যিক অবস্থার ভিত্তিতে প্রশংসা করছেন, যিনি তাদের মিষ্টি কথা বলে সালাফি হবার ও সঠিক মানহাজের উপর থাকার ভান করে নিজের ভিন্ন মত লুকিয়ে রেখেছে।

যদি তিনি প্রকৃতপক্ষেই বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে একই হতেন, তাহলে তার জবানের অনিচ্ছাকৃত ভুলে, এমনকি তার মজলিস, দরস ও বৈঠকে তা প্রকাশ পেতো। কেননা পাত্র যা ধারণ করে, সেটাই তার ভেতর থেকে বেরোয়। যদি তিনি সত্যিকার সালাফি হতেন, তাহলে তিনি জিওগ্রাফি বা অঙ্কের মতো বিষয়ও পড়ালে তার দরসে ও মজলিসে সালাফি মানহাজের ছাপ স্পষ্ট হতো—আল্লাহ আপনার বারাকাত দান করুন।

সুতরাং, আমি ঐ ব্যক্তিকে পরামর্শ দিব যে, যিনি নিজের কর্মে সালাফিয়্যাত প্রকাশ না করে শুধু তাযকিয়ার উপর নির্ভর করছেন, তিনি যেন যেকোনো স্থানের দরসে ও মজলিসে এই মানহাজের স্পষ্টতা দিয়ে নিজের তাযকিয়াহকে প্রমাণ করেন। উম্মাহ আজ এই সালাফী দাওয়াতের জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল। যদি এই উল্লেখিত ব্যক্তি শুধু তাযকিয়াহ এর উপর নির্ভর করে নিজের তাযকিয়াহ কে কর্মে প্রমাণ না করেন, তাহলে তিনি ইলম গোপন করা, আকিদা-বিশ্বাস লুকানো এবং মানহাজ আড়াল করার মাধ্যমে নিজেকেই ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। আমার আশঙ্কা হয়, জ্ঞান গোপন করা ও আমর বিল মারুফ ওয়া নাহি আনিল মুনকার না করার ব্যাপারে যে আয়াতগুলো আমরা তিলাওয়াত করেছি, তা তার উপর প্রযোজ্য হবে।

আর আল্লাহর নিকট সবচেয়ে গুরুতর, নিৎকৃষ্টতর ও ঘৃণিত মুনকার হলো উম্মাহর মধ্যে ছড়িয়ে পড়া বিদআত। অথচ অনেক মানুষ শুধু তাযকিয়াহর উপর ভরসা করে, এই অন্ধকার বাস্তবতার মুখোমুখি হয় না—যদিও তারা নিজেদের সালাফী মানহাজের উপর থাকার দাবি করে।

একবার আমি শাইখ ইবনে বাযের সাথে আলোচনায় বলেছিলাম, তার কিছু বক্তব্য তাবলীগ জামাতের জন্য কিছুটা সমর্থনের মতো শোনাচ্ছিল। যদিও সেই বক্তব্যের পাশাপাশি তাদের সুস্পষ্ট গোমরাহীর প্রতি ইঙ্গিতও ছিল। কিন্তু তারা সেই বক্তব্যের মধ্যে থাকা প্রশংসার অংশটুকু কাজে লাগায়, আর তাদের আকিদা ও মানহাজের অন্তর্নিহিত সমালোচনাগুলোকে আড়াল করে দেয়। তারা শুধু প্রশংসার অংশই তুলে ধরে, আর সমালোচনাকে গোপন রাখে।

একদা আমি শাইখের সাথে বসে তাকে বললাম, "হে আমাদের শাইখ! বর্তমানে তরুণদের কাছে আপনার মর্যাদা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইবনে তাইমিয়্যার (রাহিমাহুল্লাহ) এর সমতুল্য। মানুষের কাছে আপনার অবস্থান এমন যে, আপনি যা বলেন, তারা সেটাকে সরাসরি সত্য হিসেবে গ্রহণ করে। এখন আপনি এমন কিছু বক্তব্য দিচ্ছেন, যা মানুষ তাবলীগ জামাতের জন্য সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করছে। যদিও আপনি সতর্কতার সাথে কথা বলেছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে ধূর্ততা ও কপটতা রয়েছে। তারা আপনার প্রশংসা ও সমর্থনের অংশটুকু ব্যবহার করে, কিন্তু আপনি যে অজ্ঞতা ও গোমরাহীর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, তা তারা অস্বীকার করে..."

আমার ও শাইখের মধ্যে কথোপকথন চলতে থাকল। একপর্যায়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "হে শাইখ! কখনো কি ভারত-পাকিস্তানের আহলে হাদীস বা মিসর-সুদানের আনসারুস সুন্নাহর কেউ আপনার কাছে তাযকিয়াহ চাইতে এসেছে? ঐ সময় মিসর ও সুদানের আনসারুস সুন্নাহ সালাফী মানহাজের উপর অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। অতঃপর ফিতনা ও রাজনীতির এক ঝড় বয়ে যায়... যা তাদের ভেতর বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে এবং তাদের মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা নেমে আসে...

আমি বললাম: ভারত-পাকিস্তানের আহলে হাদীস অথবা মিসর-সুদানের আনসারুস সুন্নাহর কেউ কি আপনার কাছে এসেছে, যারা আপনার কাছ থেকে এ মর্মে তাযকিয়াহ চেয়েছে যে তারা সত্য ও সুন্নাতের পথে রয়েছেন?"

শাইখ বললেন, "না।"

আমি বললাম, "কেন?"

শাইখ জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কী মনে কর?"

আমি বললাম, "কারণ আহলে হাদীস ও আনসারুস সুন্নাহর লোকদের আমলই তাদের সাক্ষ্য দেয় যে তারা সত্যের উপর আছেন। কিন্তু তাবলীগ জামাত ও তাদের মতো গোষ্ঠীর আমল তাদের সমর্থন করে না; বরং তাদের গোমরাহী ও বিদ‘আতের সাক্ষ্য দেয়।"

শাইখ মুচকি হেসে ফেললেন (আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন)। এটা সুস্পষ্ট যে, ঐসব ব্যক্তিদের তাযকিয়াহ, তাদের আমল, তাদের অবস্থান কোনোকিছুই সাক্ষ্য দেয় না যে তারা সালাফি। তাহলে তারা যেই নিচু পন্থা অবলম্বন করে তা হলো কিছু মানুষের কাছে ধোঁকা ও তোষামোদি করে তাযকিয়াহ আদায় করে। তারা এই তাযকিয়াহ/প্রশংসা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। হায়, যদি তারা নিজেদের অনিষ্ট ও অপকর্ম থেকে সত্য ও সুন্নাতের অনুসারীদের বিরুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত থাকতো! কিন্তু তারা এই তাযকিয়াহগুলো দিয়ে সালাফী তরুণদের ফাঁদে ফেলে, তাদেরকে সালাফী মানহাজ থেকে বিচ্যুত করে। আমি এ ধরনের বহু লোককে চিনি, যারা এই নিকৃষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করে।

অতএব, আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই এবং দোয়া করি, তিনি যেন তাদেরকে তাদের আমলের মাধ্যমে নিজেদের সত্যতা প্রমাণের তাওফিক দেন এবং তাদের আমলকে যেন তাদের ভালো চরিত্র, সততা ও সালাফী মানহাজের প্রতি অবিচল থাকার সাক্ষ্য করে দেন।

السؤال: بعض الدعاة لا تعرف لهم سلفية وقد حذر منهم، وما زال هناك من يجالس أولئك الدعاة بحجة أنه لم يجرح بجرح مفصل، وقد زكوا من قبل الشيخ العباد وغيره، فانقسم الإخوة بين مجرح ومعدل لأولئك الدعاة فما قولكم لهم؟

الجواب: قولي: يجب على هذا الشخص الذي يختلف حوله الناس ولا يزكي نفسه بإبراز المنهج السلفي وإنما يعتمد على تزكية فلان وفلان وفلان وفلان ليسوا بمعصومين في تزكياتهم.

فقد يزكون بناء على ظاهر حال الشخص الذي قد يتمَلقُهم ويتظاهر لهم بأنه على سلفية وعلى منهج صحيح وهو يبطن خلاف ما يظهر، ولو كان يبطن مثل ما يظهر لظهر على فلتات لسانه وفي جلساته وفي دروسه ومجالسه فإن الإناء ينضحبما فيه، وكل إناء بما فيه ينضح، فإذا كان سلفيا فلو درس أي مادة ولو جغرافيا أو حساب لرأيت المنهج السلفي - بارك الله فيك - ينضح في دروسه وفي جلساته وغيرها.

فأنا أنصح هذا الإنسان الذي لا يُظهر سلفيته ويكتفي بالتزكيات أن يزكي نفسه بالصدع بهذا المنهج في دروسه في أي مكان من الأمكنة، فإن الأمة بأمس الحاجة إلى الدعوة إلى هذا المنهج السلفي، فإذا كان هذا الشخص من هذا النوع الذي قلت أنه يعتمد على التزكيات ولا يزكي نفسه، فإن هذا يضر نفسه بكتمان العلم وكتمان العقيدة وكتمان هذا المنهج، وأخشى أن تصدق عليه هذه الآيات التي تلوناها عليكم في كتمان العلم وعدم الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر.

ومن أعظم المنكرات وأقبحها وشرها عند الله : البدع التي تتفشى في أوساط الأمة، ثم كثير من الناس يعتمد على التزكيات ولا يواجه هذا الواقع المظلم بما عنده مما يزعمه أنه على المنهج السلفي.

وأنا مرة قلت للشيخ ابن باز كانت تصدر منه بعض الكلمات يعني تشبه تزكية لجماعة التبليغ، وإن كان إلى جانبها شيء من لفتات الأذكياء إلى ما عندهم من ضلال مبين، فيستغل هؤلاء الكلمات التي فيها شيء من الثناء عليهم ويخفون

ما فيها من طعن خفي في عقيدتهم ومنهجهم، فيبرزون الثناء ويخفون الجرح.
جلست معه جلسة قلت: يا شيخنا، أنت الآن عند الشباب بمنزلة أحمد بن حنبل وابن تيمية رحم الله الجميع، لك منزلة عند الناس يعني إذا قلت كلمة تلقفوها على أنها حق، والآن أنت تصدر منك كلمات يعتبرها الناس تزكية الجماعة التبليغ، وإن كنت تتحفظ يعني خلال كلامك، لكن هم عندهم دهاء وعندهم مكر يستغلون التزكية والثناء وينكرون ما تشير إليه وتلمح إليه من جهل وضلال.....

ودار الكلام بيني وبينه إلى أن قلت له: ياشيخ، قال: نعم، قلت: هل جاءك أحد من أهل الحديث من الهند وباكستان أو من أنصار السنة في مصر والسودان؟ ذاك الوقت أنصار السنة في مصر والسودان على غاية الثبات على المنهج السلفي، ثم هبت عاصفة الفتن والسياسة .... فدبت في صفوفهم وأوقعت فيهم الكثير من الخلخلة ....

قلت: هل جاءك أحد من أهل الحديث من الهند وباكستان أو من أنصار السنة في مصر والسودان يطلب منك تزكية على أنهم على حق وعلى سنة؟ قال: لا. قلت له: لماذا ؟ قال: لماذا أنت ؟

قلت: لأن هؤلاء تشهد لهم أعمالهم وتزكيهم بأنهم على الحق، وأما جماعة التبليغ وأمثالهم فإن أعمالهم لا تزكيهم، بل تدينهم بأنهم على ضلال وبدع.

فضحك الشيخ رحم الله ؛ فهذا أمر واضح لا تزكيه أعماله ولا مواقفه ولا تشهد له بأنه سلفي، فيلجأ إلى هذه الوسائل الدنيئة من الاحتيال على بعض الناس والتملق لهم حتى يحصل على تزكية ويكتفون بهذا ويذهبون، ليتهم يكفون بأسهم وشرهم عن أهل الحق والسنة، فيذهبون يتصيدون أهل السنة بهذه التزكيات، فتكون مصيدة، فيضيعون بها شباباً كثيرا ويحرفونهم عن المنهج السلفي، وأنا أعرف من هذا النوع كثيرا وكثيرًا، الذي يسلك هذا المسلك السيئ. فنسأل الله العافية وأن يوفقهم بأن يزكوا أنفسهم بأعمالهم، وأن يجعل من أعمالهم شاهدًا لهم بالخير والصلاح وبالمنهج السلفي.

সূত্র: মাজমু' কুতুব ওয়া রাসায়েল ওয়া ফাতাওয়া ফাদ্বিলাতিশ শাইখ আল্লামা রাবী বিন হাদী উমাইর আল মাদখালি, ১৪/২৫৯-২৬১

অনুবাদ ও লেখা: সাফিন চৌধুরী
জয়েন টেলিগ্রাম: ideology of salaf
 

Attachments

  • 20250429_233622.png
    20250429_233622.png
    2.2 MB · Views: 18
Last edited:
Back
Top