প্রশ্নোত্তর আমি অনেক শুনেছি যে, মানুষের উপর বালা-মুসিবত নামার পেছনে কিছু মহান হেকমত রয়েছে। এ হেকমতগুলো কি কি?

Joined
Nov 17, 2023
Threads
404
Comments
519
Solutions
1
Reactions
12,554
উত্তর :আলহামদু লিল্লাহ।.

হ্যাঁ; বান্দাকে পরীক্ষা করার পেছনে কিছু মহান রহস্য রয়েছে; যেমন:

১। বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌র দাসত্ব বাস্তবায়ন:

অনেক মানুষ তার কুপ্রবৃত্তির দাস; আল্লাহ্‌র দাস নয়। সে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয় যে, সে আল্লাহ্‌র দাস। কিন্তু যখন কোন পরীক্ষার মুখোমুখি হয় তখন সে বিপরীত দিকে ধাবিত হয়, দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টার লোকসান দেয়। এটা হচ্ছে সুস্পষ্ট লোকসান। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “মানুষের মাঝে কেউ কেউ আল্লাহ্‌র ইবাদত করে দ্বিধাদ্বন্ধের সাথে। তার কোন মঙ্গল হলে এতে তার চিত্ত প্রশান্ত হয়। আর কোন বিপর্যয় ঘটলে সে বিপরীত মুখে ধাবিত হয় (অর্থাৎ কুফরের দিকে ফিরে যায়), দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টার লোকসান দেয়। অবশ্যই এটা সুস্পষ্ট লোকসান।”[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ১১]

২। মুমিনদেরকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয় পরীক্ষার মাধ্যমে:

ইমাম শাফেয়িকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: কোনটি উত্তম: ধৈর্য, পরীক্ষা নাকি ক্ষমতায়ন। তিনি বলেন: ক্ষমতায়ন নবীদের স্তর। পরীক্ষা করা ছাড়া ক্ষমতায়ন করা হয় না। যখন পরীক্ষা করা হয় তখন ধৈর্য ধারণ করেন। ধৈর্য ধারণ করলে ক্ষমতা দেয়া হয়।

৩। গুনাহ মোচন:

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “মুমিন নর-নারীর জীবন, সন্তান ও সম্পদের উপর পরীক্ষা চলতে থাকে। এক পর্যায়ে সে আল্লাহ্‌র সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করে যে, তার কোন গুনাহ থাকে না।”[সুনানে তিরমিযি (২৩৯৯)]

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যদি আল্লাহ্‌ কোন বান্দার ভাল চান দুনিয়াতে অগ্রিম তাকে শাস্তি দিয়ে দেন। আর যদি বান্দার অকল্যাণ চান বান্দার পাপটাকে ধরে রাখেন যাতে করে কিয়ামতের দিন পূর্ণভাবে এর শাস্তি দিতে পারেন।”[সুনানে তিরমিযি (২৩৯৬), আলবানী ‘সিলসিলা সহিহা’ গ্রন্থে (১২২০) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

৪। সওয়াব অর্জন ও মর্যাদা বৃদ্ধি:

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “কোন মুমিন যদি একটি কাঁটা দ্বারা কিংবা এর চেয়ে বেশি কিছু দ্বারা আক্রান্ত হয় এর মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন কিংবা তার একটি গুনাহ হ্রাস করেন।”[সহিহ মুসলিম (২৫৭২)]

৫। মুসিবতের শিকার হওয়া নিজের দোষত্রুটি নিয়ে ও অতীত জীবনের ভুলভ্রান্তি নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ তৈরী করে দেয়:

কেননা এটি যদি শাস্তি হয় তাহলে ভুল কোথায়?

৬। বালা-মুসিবত তাওহীদ, ঈমান ও তাওয়াক্কুলের অন্যতম একটি শিক্ষা:

বালা-মুসিবত বাস্তবে আপনার নিজের স্বরূপ আপনার কাছে তুলে ধরে যাতে করে আপনি জানতে পারেন যে, আপনি একজন দুর্বল দাস, আপনার রব ছাড়া আপনার কোন ক্ষমতা নেই শক্তি নেই। তখন আপনি তাঁর উপর পরিপূর্ণভাবে নির্ভর (তাওয়াক্কুল) করবেন। পরিপূর্ণভাবে তাঁর কাছে আশ্রয় নিবেন; আর তখনি গৌরব, অহমিকা, অহংকার, আত্মপ্রীতি, প্রবঞ্চনা ও গাফলতির পতন হবে। আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনি এমন এক অসহায় ব্যক্তি যে তার মনিবের শরণাপন্নের মুখাপেক্ষী, এমন এক দুর্বল ব্যক্তি যে মহাশক্তিধর ও পরাক্রমশালীর আশ্রয়ের কাঙ্গাল।

ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন:

“যদি না আল্লাহ্‌ বান্দাকে বিপদমুসিবতের ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা না করতেন তাহলে তারা সীমালঙ্ঘন করত, অবাধ্য হত ও ধৃষ্টতা দেখাত। আল্লাহ্‌ যদি কোন বান্দার কল্যাণ চান তার অবস্থা অনুপাতে তাকে পরীক্ষার ঔষধ সেবন করান। এর মাধ্যমে তিনি তাকে ধ্বংসাত্মক রোগ-বালাই থেকে মুক্ত করেন। এক পর্যায়ে তিনি তাকে পরিশোধিত, নির্মল ও পরিশুদ্ধ করেন: দুনিয়ার সর্বোচ্চ মর্যাদা ও আখিরাতের সর্বোচ্চ সওয়াব দেয়ার জন্য তাকে প্রস্তুত করেন। সেই মর্যাদা হচ্ছে তাঁর দাসত্ব এবং সেই সওয়াব হচ্ছে তাঁর দর্শন ও তাঁর নৈকট্য।”[যাদুল মাআদ (৪/১৯৫) থেকে সমাপ্ত]

৭। পরীক্ষা মানুষের অন্তর থেকে আত্মপ্রীতিকে দূর করে, আত্মাগুলোকে আল্লাহ্‌র নিকটবর্তী করে:

ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন: গ্রন্থাকারের উদ্ধৃতি “এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে অভিভুত করেছিল তোমাদের সংখ্যাধিক্য হওয়া।”[সূরা তাওবা, আয়াত: ২৫] ইউনুস বিন বুকাইর ‘যিয়াদাতুল মাগাজি’ গ্রন্থে রাবিঅ বিন আনাস বর্ণনা করেন যে তিনি বলেন: হুনায়নের দিন এক লোক বলল: আজ আমরা সংখ্যা স্বল্প হওয়ার কারণে পরাজিত হব না। এ কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কঠিন মনে হল। ফলাফল হল পরাজয়..”।

ইবনুল কাইয়্যেম যাদুল মাআদ গ্রন্থে (৩/৪৭৭) বলেন:

“আল্লাহ্‌ তাআলার হেকমতের দাবী ছিল মুসলমানদের সংখ্যা ও রসদের আধিক্য এবং শক্তির দাপট থাকা সত্ত্বেও প্রথমে তাদেরকে পরাজয়ের তিক্ততা আস্বাদন করানো; যাতে করে এমন কিছু মাথাকে নত করে দিতে পারেন যারা বিজয়ের সুখে মাথা উঁচু করে আছে। যে মাথাগুলো আল্লাহ্‌র শহর ও তাঁর হারামে সেইভাবে প্রবেশ করেনি যেইভাবে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রবেশ করেছেন— ঘোড়ার পিঠে মাথা নীচু করে; এমনকি তাঁর থুতনি ঘোড়ার লাঘাম স্পর্শ করার উপক্রম হয়েছিল; তার রবের প্রতি বিনয় প্রকাশার্থে এবং তাঁর মহত্বের প্রতি নত হয়ে, তাঁর কর্তৃত্বের প্রতি বিনীত হয়ে।”[সমাপ্ত]

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “আর যাতে আল্লাহ্‌ মুমিনদেরকে পরিশোধন করতে পারেন এবং কাফেরদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেন।”[সূরা আলে ইমরান, আয়াত:১৪১]

অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তাদেরকে গুনাহ থেকে, অন্তরের রোগগুলো থেকে মুক্ত ও পরিশুদ্ধ করতে পারেন। অনুরূপভাবে তিনি তাদেরকে মুনাফিকদের থেকে মুক্ত করেছেন ও বাছাই করে নিয়েছেন ফলে মুমিনরা তাদের থেকে আলাদা হয়ে যায়...। এরপর অন্য একটি হেকমতের কথা উল্লেখ করেন। সেটা হল কাফেরদেরকে ধ্বংস করা। কেননা তারা আধিপত্য লাভ করতে পারলে সীমালঙ্ঘন করে ও অহংকার করে। তখন এটা হয় তাদের ধ্বংস ও বিলীন হওয়ার কারণ। কারণ আল্লাহ্‌র চিরায়ত নিয়ম হচ্ছে তিনি তাঁর শত্রুদেরকে ধ্বংস করতে চাইলে ও নিশ্চিহ্ন করতে চাইলে তিনি তাদের জন্য কারণ সৃষ্টি করেন। যে কারণগুলোর মাধ্যমে তারা তাদের ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন হওয়াকে টেনে আনে। এ কারণগুলোর মধ্যে কুফরীর পর সবচেয়ে জঘন্য কারণ হচ্ছে আল্লাহ্‌র মিত্রদেরকে কষ্ট দেয়া, তাদেরকে প্রতিহত করা, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ও আধিপত্য বিস্তার করার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করা, বাড়াবাড়ি করা...। যারা উহুদের দিন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে লড়েছিল ও কুফরের উপর বহাল ছিল আল্লাহ্‌ তাদের সবাইকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন।”[সমাপ্ত]

৮। মানুষের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে দেওয়া। এমন কিছু মানুষ আছে যাদের মর্যাদা কেবল বিপদমুসিবতের সময়ই জানা যায়:

ফুযাইল বিন ইয়ায বলেন: “যতক্ষণ মানুষ নিরাপদে থাকে আড়াল হয়ে থাকে। কিন্তু যখনই তাদের উপর কোন বালা-মুসিবত নেমে আসে তখনই তারা তাদের স্বরূপে ফিরে আসে। তখন ঈমানদার তার ঈমানের দিকে ফিরে আসে এবং মুনাফিক তার নিফাকের দিকে ফিরে আসে।”

আবু সালামা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: অনেক মানুষ ফিতনার শিকার হয়েছে (অর্থাৎ মিরাজের ঘটনার পরে)। কিছু মানুষ আবু বকর (রাঃ) এর কাছে এসে ঘটনা উল্লেখ করল। তখন তিনি বললেন: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি সত্যবাদী। তারা বলল: আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, তিনি এক রাতে শামে গিয়ে সেখান থেকে আবার মক্কায় ফিরে এসেছেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ। আমি তো এর চেয়ে দুঃসাধ্য বিষয়ে তাঁকে বিশ্বাস করি। আমি আসমানের সংবাদের ব্যাপারে তাঁকে বিশ্বাস করি। তিনি বলেন: এ কারণে তাঁকে সিদ্দিক (বিশ্বাসী) উপাধি দেয়া হয়।”

৯। পরীক্ষা সুপুরষ গড়ে তোলে ও তাদেরকে প্রস্তুত করে:

আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁর নবীর জন্য কঠিন জীবন নির্বাচন করেছেন; যে জীবনের মাঝে রয়েছে নানারকম চ্যালেঞ্জ; ছোটকাল থেকে। যাতে করে তাঁকে মহান দায়িত্বের জন্য তাঁকে প্রস্তুত করতে পারেন যে দায়িত্ব তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে। যে দায়িত্ব পালনে মহাপুরুষরা ছাড়া ধৈর্য রাখার ক্ষমতা কারো নেই। কঠিন পরিস্থিতি যাদেরকে কাঁপিয়ে তুলেছে কিন্তু তারা খামোশ ছিলেন এবং বিপদমুসিবত দিয়ে যাদেরকে পরীক্ষা করা হয়েছে কিন্তু তারা ধৈর্য রাখতে পেরেছেন।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইয়াতীম হিসেবে বেড়ে উঠেছেন। কিছু দিন যেতে না যেতে তাঁর মাও মারা যান। আল্লাহ্‌ তাআলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সেই স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলছেন: “তিনি কি আপনাকে ইয়াতীম অবস্থায় পাননি? অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন।” যেন আল্লাহ্‌ তাআলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ছোট বেলা থেকেই দায়িত্ব বহন করা ও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত করছিলেন।

১০। বালা-মুসিবতের হেকমতের মধ্যে রয়েছে যে, মানুষ প্রকৃত বন্ধু ও সুবিধাভোগী বন্ধুদের চিনে নিতে পারে:

যেমনটি কবি বলেছেন:

আল্লাহ্‌ বিপদমুসিবতকে উত্তম প্রতিদান দিন যদিও সেই বিপদগুলো আমার গলায় লালাকে আটকে দেয়।

আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যেহেতু তার মাধ্যমে আমি শত্রু থেকে বন্ধুকে চিনতে পেরেছি।

১১। পরীক্ষা আপনাকে আপনার পাপগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিবে যাতে আপনি তওবা করতে পারেন:

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “এবং যা কিছু অকল্যাণ আপনাকে আক্রান্ত করে তা আপনার নিজের পক্ষ থেকেই”[সূরা নিসা, আয়াত: ৭৯] তিনি আরও বলেন: “আর তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তা তোমাদের হাত যা অর্জন করেছে তার কারণে এবং অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন।”[সূরা নিসা, আয়াত: ৩০]।

অতএব, বালা মুসিবত কিয়ামতের দিন মহাশাস্তি অবতীর্ণ হওয়ার আগে তাওবা করার জন্য একটি সুযোগ তৈরী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “আর অবশ্যই আমরা তাদেরকে মহা শাস্তির পূর্বে কিছু লঘু শাস্তি আস্বাদন করাব যাতে তারা ফিরে আসে।”[সূরা আস্‌-সাজদাত আয়াত: ২১]

লঘু শাস্তি হল— দুনিয়ার দুর্দশা, দুর্গতি এবং মানুষ যে মন্দ ও অনিষ্ট দ্বারা আক্রান্ত হয় সেগুলো।

যদি কারো জীবন আনন্দে কাটতে থাকে এটি মানুষকে প্রবঞ্চিত করে, অহংকারে পরিণত করে। মানুষ নিজেকে আল্লাহ্‌ থেকে অমুখাপেক্ষী হয়ে গেছে ভাবতে থাকে। তখন আল্লাহ্‌ তাআলা রহমতস্বরূপ বান্দাকে পরীক্ষায় ফেলেন যাতে করে বান্দা ফিরে আসে।

১২। বালা-মুসিবত আপনার সামনে দুনিয়ার স্বরূপ ও চাকচিক্যকে উন্মোচন করে দিবে এবং জানাবে যে, দুনিয়া হচ্ছে প্রবঞ্চনামূলক ভোগ্যসামগ্রী:

পরিপূর্ণ সুস্থ জীবন হচ্ছে এই দুনিয়ার পরবর্তী জীবন। যে জীবনে কোন রোগ নাই। কোন কষ্ট-ক্লেশ নাই। “আর নিশ্চয় আখেরাতের জীবনই তো প্রকৃত জীবন; যদি তারা জনত।”[সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৬৪] এই দুনিয়া হচ্ছে দুর্দশা, ক্লান্তি ও দুঃশ্চিন্তায় ভরপুর। “নিঃসন্দেহে আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্ট-ক্লেশের মধ্যে।”[সূরা বালাদ, আয়াত: ৪]

১৩। বালা-মুসিবত আপনার উপর আল্লাহ্‌র দেয়া সুস্থতা ও নিরাপত্তার নেয়ামতকে স্মরণ করিয়ে দেয়:

এই মুসিবত আপনার সামনে চূড়ান্ত অলংকারপূর্ণ ভাষায় সুস্থতা ও নিরাপত্তার ভাব তুলে ধরবে। অনেক বছর আপনি যে নেয়ামতদ্বয় ভোগ করে আসছিলেন। কিন্তু আপনি এ নেয়ামতদ্বয়ের মিষ্টতা চেখে দেখেননি, এ দুটো নেয়ামতকে যথাযথ মর্যাদা দেননি।

বিপদমুসিবত আপনাকে নেয়ামতদাতা ও নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে। যার ফলে এটি আল্লাহ্‌র নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা ও তাঁর প্রশংসা করার কারণ হবে।

১৪। জান্নাতের প্রতি আসক্তি:

আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতের প্রতি আসক্তি অনুভব করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি দুনিয়ার তিক্ষতা না চেখেন। সুতরাং আপনি দুনিয়াতে সুখী হলে কিভাবে জান্নাতের প্রতি আসক্তি অনুভব করবেন?

বালা-মুসিবতের কিছু গূঢ় রহস্য ও এর ফলে যে কল্যাণগুলো সাধিত হয় সেগুলোর কিয়দাংশ উল্লেখ করা হল। আল্লাহ্‌র হেকমত ও গূঢ় রহস্য আরও মহান ও মর্যাদাপূর্ণ।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।


 
This user is banned.
Interaction with this account is disabled until the ban ends.
জাযাকাল্লাহ খাইর
 
Similar threads Most view View more
Back
Top