Member
জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অহী বন্ধ থাকা সময়কাল সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছি। তিনি তাঁর আলোচনার মাঝে বলেন, “একবার আমি হাঁটছিলাম, তখন আকাশ থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। মাথা উপরে তুলেই আমি দেখলাম যে ফিরিশতা হেরা গুহায় আমার কাছে এসেছিল সে ফিরিশতা (জিবরীল) আসমান ও জমিনের মাঝে রক্ষিত একটি আসনে বসে আছে। আমি তার ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এসে বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত করো, আমাকে বস্ত্রাবৃত করো। তারা আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। এরপর আল্লাহ নাযিল করলেন, “হে বস্ত্রাবৃত! উঠুন, অতঃপর সতর্ক করুন। আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। আপনার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র করুন। আর অপবিত্রতা বর্জন করুন”। [সূরা আল-মুদ্দাসসির, আয়াত: ১-৫] আবু সালামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, ‘রুজয’ অর্থ হল মূর্তিগুলো। এরপর থেকে ঘনঘন এবং ধারাবাহিকভাবে অহী আসতে লাগল”।
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬১।
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
“অতঃপর অহী আগমনের ধারা বাড়লো এবং ধারাবাহিকভাবে নাযিল হতে লাগল”।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, فَتْرَة الوَحْيِ অর্থ হলো আটকিয়ে রাখা, বেঁধে রাখা, বন্ধ থাকা, পরপর অহী নাযিল না হওয়া। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, চল্লিশ দিন অহী নাযিল বন্ধ ছিলো। কিন্তু সুহাইলী তার "الروض الأنف" এ ২/৪৩৩ বলেছেন, প্রথম অহী নাযিলের পরে আড়াই বছর অহী নাযিল বন্ধ ছিলো। এ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন, ইবন হাজার আসকালানী রহ. এর ‘ফাতহুল বারী’ ১/২৭।
ইয়াহইয়া ইবন আবী কাসীর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সালামাকে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোন আয়াতটি সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বললেন, أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ আমি বললাম, নাকি اقْرَأْ তিনি বললেন, আমিও জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কুরআনের কোন আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেছেন, يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ আমি বললাম, اقْرَأْ । জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি তোমাদের তাই বর্ণনা করছি, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমি একমাস হেরা গুহায় অবস্থান করি। অবস্থান শেষে আমি নিচে নেমে এলাম। উপত্যকার মাঝখানে যখন পৌঁছলাম তখন আমাকে ডাকা হলো। আমি সামনে-পেছনে ও ডানে-বায়ে তাকালাম। কাউকে দেখলাম না। তারপর আমাকে ডাকা হলো, তখনো কাউকে দেখতে পেলাম না। পুনরায় আমাকে ডাকা হলো। আমি তাকালাম, দেখি সে ফিরিশতা (অর্থাৎ জিবরীল আলাইহিস সালাম) শূন্যে একটি কুরসীর উপর উপবিষ্ট। আমার প্রবল কম্পন গুরু হলো। অনন্তর খাদীজার কাছে আসলাম। বললাম তোমরা আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত করো। তারা আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিল। আমার উপর পানি ঢালল। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন, “হে বস্ত্রাবৃত! উঠুন, অতঃপর সতর্ক করুন। আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। আপনার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র করুন”। [সূরা আল-মুদ্দাসির, আয়াত: ১-৪]
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৯২২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬১ বা ২৫৭। হাদীসের শব্দাবলী মুসলিমের।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي এর অর্থ হলো, আমি যখন আমার ই‘তিকাফ কাটালাম।
عَنْ جَابِر بْن عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الوَحْيِ، قَالَ فِي حَدِيثِهِ: " بَيْنَا أَنَا أَمْشِي سَمِعْتُ صَوْتًا مِنَ السَّمَاءِ، فَرَفَعْتُ بَصَرِي، فَإِذَا المَلَكُ الَّذِي جَاءَنِي بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، فَفَرِقْتُ مِنْهُ، فَرَجَعْتُ، فَقُلْتُ: زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي "، فَدَثَّرُوهُ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: ﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ وَٱلرُّجۡزَ فَٱهۡجُرۡ ٥﴾ [المدثر: ١، ٥] قَالَ أَبُو سَلَمَةَ: وَهِيَ الأَوْثَانُ، قَالَ: «ثُمَّ تَتَابَعَ الوَحْيُ».
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬১।
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
«ثم حمي الوحي وتتابعَ»
“অতঃপর অহী আগমনের ধারা বাড়লো এবং ধারাবাহিকভাবে নাযিল হতে লাগল”।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, فَتْرَة الوَحْيِ অর্থ হলো আটকিয়ে রাখা, বেঁধে রাখা, বন্ধ থাকা, পরপর অহী নাযিল না হওয়া। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, চল্লিশ দিন অহী নাযিল বন্ধ ছিলো। কিন্তু সুহাইলী তার "الروض الأنف" এ ২/৪৩৩ বলেছেন, প্রথম অহী নাযিলের পরে আড়াই বছর অহী নাযিল বন্ধ ছিলো। এ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন, ইবন হাজার আসকালানী রহ. এর ‘ফাতহুল বারী’ ১/২৭।
عن يَحْيَى بن أبي كثير يَقُولُ: سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ أَيُّ الْقُرْآنِ أُنْزِلَ قَبْلُ؟ قَالَ: يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ، فَقُلْتُ: أَوِ اقْرَأْ؟ فَقَالَ: سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ أَيُّ الْقُرْآنِ أُنْزِلَ قَبْلُ؟ قَالَ: يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ، فَقُلْتُ: أَوْ اقْرَأْ؟ قَالَ جَابِرٌ: أُحَدِّثُكُمْ مَا حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ شَهْرًا، فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي نَزَلْتُ فَاسْتَبْطَنْتُ بَطْنَ الْوَادِي، فَنُودِيتُ فَنَظَرْتُ أَمَامِي وَخَلْفِي، وَعَنْ يَمِينِي، وَعَنْ شِمَالِي، فَلَمْ أَرَ أَحَدًا، ثُمَّ نُودِيتُ فَنَظَرْتُ فَلَمْ أَرَ أَحَدًا، ثُمَّ نُودِيتُ فَرَفَعْتُ رَأْسِي، فَإِذَا هُوَ عَلَى الْعَرْشِ فِي الْهَوَاءِ - يَعْنِي جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ - فَأَخَذَتْنِي رَجْفَةٌ شَدِيدَةٌ، فَأَتَيْتُ خَدِيجَةَ، فَقُلْتُ: دَثِّرُونِي، فَدَثَّرُونِي، فَصَبُّوا عَلَيَّ مَاءً، فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: ﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤﴾ [المدثر: ١، ٤]».
ইয়াহইয়া ইবন আবী কাসীর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সালামাকে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোন আয়াতটি সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বললেন, أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ আমি বললাম, নাকি اقْرَأْ তিনি বললেন, আমিও জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কুরআনের কোন আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেছেন, يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ আমি বললাম, اقْرَأْ । জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি তোমাদের তাই বর্ণনা করছি, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমি একমাস হেরা গুহায় অবস্থান করি। অবস্থান শেষে আমি নিচে নেমে এলাম। উপত্যকার মাঝখানে যখন পৌঁছলাম তখন আমাকে ডাকা হলো। আমি সামনে-পেছনে ও ডানে-বায়ে তাকালাম। কাউকে দেখলাম না। তারপর আমাকে ডাকা হলো, তখনো কাউকে দেখতে পেলাম না। পুনরায় আমাকে ডাকা হলো। আমি তাকালাম, দেখি সে ফিরিশতা (অর্থাৎ জিবরীল আলাইহিস সালাম) শূন্যে একটি কুরসীর উপর উপবিষ্ট। আমার প্রবল কম্পন গুরু হলো। অনন্তর খাদীজার কাছে আসলাম। বললাম তোমরা আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত করো। তারা আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিল। আমার উপর পানি ঢালল। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন, “হে বস্ত্রাবৃত! উঠুন, অতঃপর সতর্ক করুন। আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। আপনার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র করুন”। [সূরা আল-মুদ্দাসির, আয়াত: ১-৪]
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৯২২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬১ বা ২৫৭। হাদীসের শব্দাবলী মুসলিমের।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي এর অর্থ হলো, আমি যখন আমার ই‘তিকাফ কাটালাম।
Last edited: